রাজধানীর যমুনায় আজ ছিল ব্যতিক্রম এক চিত্রের সাক্ষী। ছাত্রদের নেতৃত্বে আয়োজিত রাজনৈতিক অবস্থান কর্মসূচিতে কেবল শিক্ষার্থী নয়—সংহতি প্রকাশ করে অংশ নিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন ইসলামী রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এবং সাধারণ আলেম সমাজের সদস্যরাও।
এই কর্মসূচির মূল তিনটি দাবি—
১. আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা
২. নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ নির্বাচন
৩. ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও গণগ্রেফতার বন্ধ
আন্দোলনের আয়োজক 'ছাত্রজনতা' বলছে, "দেশে একদলীয় শাসনের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নেয়ার বিরুদ্ধে এই প্রতিরোধ আন্দোলন।" তারা আরও দাবি করে, সরকারবিরোধী মতকে দমন করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অপব্যবহার করা হচ্ছে।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগর শাখার নেতৃবৃন্দ এবং আরও কয়েকটি ইসলামপন্থী দলের প্রতিনিধি।
একজন সিনিয়র আলেম তার বক্তব্যে বলেন, "এই আন্দোলন রাজনৈতিক হলেও এর অন্তর্নিহিত ইস্যুগুলো ইসলামী মূল্যবোধের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত—ন্যায়বিচার, জবাবদিহিতা এবং জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন।"
অন্যান্য বক্তারা সরকারের রাজনৈতিক আচরণকে ‘ধর্ম ও সংবিধানের পরিপন্থী’ বলেও অভিহিত করেন।
ডিএমপি জানিয়েছে, কর্মসূচিকে ঘিরে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো উচ্চ সতর্কতায় রয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া না গেলেও ক্ষমতাসীন দলের একটি দায়িত্বশীল সূত্র একে ‘রাজনৈতিক চাপ তৈরির একটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টা’ বলে মন্তব্য করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসলামপন্থী দলগুলোর এই সরাসরি সমর্থন ছাত্রভিত্তিক আন্দোলনকে একটি বৃহত্তর জাতীয় রাজনৈতিক জোট গঠনের সম্ভাবনার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। অতীতে বিভিন্ন সরকারবিরোধী আন্দোলনে এই ধরনের দ্বৈত ভিত্তির (ছাত্র+ধর্মীয় সমাজ) আন্দোলন পরিবর্তনের গতি বাড়িয়েছে।